কেন ?
যুদ্ধাস্ত্র ক্রয়ের পেছনে যা খরচ করা হয় তার মাত্র ১০% দিয়ে আমরা সারা বিশ্বের মানুষের ক্ষুধা দূর করতে পারি। এটা কি ভাবা যায়, আমাদের জীবন কিরকম হত যদি যুদ্ধাস্ত্রের বাজেটের মাত্র ৩০-৫০% অস্ত্র ক্রয়ের পেছনে ব্যবহার না করে মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে বরাদ্দ হত? আমরা বিশ্ব পরিভ্রমণ করবো কারণ যুদ্ধ ও হিস্রতাকে বর্জন করা মানেই হচ্ছে মানুষের পূর্ব ইতিহাসকে পেছনে ফেলা এবং মানবজাতির ক্রমবিকাশের পথে একটি বিশাল পদপে নেয়া। কারণ আমরা আমাদের শত শত পূর্ব পুরুষের হাহাকার ধ্বনি দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে আছি, যারা যুদ্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল এবং বর্তমানে যারা মৃতপ্রায়, পঙ্গু , শরণার্থী এবং স্থানচ্যুত তাদের মধ্যে সেই হাহাকার ও কষ্টের প্রতিধ্বনি আজও শোনা যায়। কেননা “যুদ্ধমুক্ত পৃথিবী” এমন একটি প্রতিচ্ছবি যা ভবিষ্যতের দুয়ার খুলে দেয় এবং পৃথিবীর প্রতিটি কোনে বাস্তবিক হওয়ার প্রচেষ্টা চালায়, যেহেতু হিংস্রতা সংলাপের সুযোগ করে দেয়। নির্বাকদের শুনতে পাওয়ার সেই মাহেন্দ্রণ আজ আমাদের দোরগোড়ায় উপস্থিত! অসহ্য যন্ত্রণা ও তীব্র প্রয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতে লক্ষ লক্ষ মানুষ আজ যুদ্ধ ও হিংস্রতা অবসানের আশায় আর্তনাদ করছে। বিশ্বব্যাপী শান্তিবাদ ও সক্রিয় অহিংসবাদ এর সকল শক্তি সমূহকে একত্রিত করে আমরা আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারি।
কখন ?
জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত “আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস” , গান্ধীর জন্মবার্ষিকীতে অর্থাৎ ২রা অক্টোবর ২০০৯ সালে “শান্তি ও অহিংসার লক্ষ্যে বিশ্বপরিভ্রমণ” নিউজিল্যান্ড থেকে যাত্রা শুরু করবে। এটা শেষ হবে ২রা জানুয়ারী ২০১০ সালে আন্দিজ পর্বতের পাদদেশে (পুন্তা ডি ভাকাস, এ্যাকাংকাগুয়া, আর্জেন্টিনা)।
কারা অংশ গ্রহণ করবে ?
বিশ্বপরিভ্রমণটি “যুদ্ধ মুক্ত পৃথিবী” নামক একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা যা হিউম্যানিস্ট মুভমেন্ট কর্তৃক নির্দেশিত, বিগত ১৫ বছর ধরে শান্তিবাদ ও অহিংস ধারণার প্রচারে কাজ করছে তারা এই পরিভ্রমণটির আয়োজক। যাই হোক, এই বিশ্ব পরিভ্রমণ বাস্তবায়িত হবে এবং চূড়ান্ত রুপ লাভ করবে প্রতিটি ব্যক্তি মানুষের অংশগ্রহণ দ্বারা, যেকোন ব্যক্তি, সংগঠন, গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য এটা উন্মুক্ত, যারা আমাদের মতই আকাংখা পোষণ করেন এবং সংবেদনশীলতা অনুভব করেন। এটা কোন আবদ্ধ প্রকল্প তো নয়ই বরং এ পরিভ্রমণের ব্যপকতা বৃদ্ধি পাবে যখন একে বাস্তবায়ন করার জন্য নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগসমূহ প্রসারিত হবে। এ কারণেই যে কারো এবং সবার জন্য এটা এমন একটা আমন্ত্রণ, সেখানে স্বাধীনভাবে অংশগ্রহণ করা যাবে। সুতরাং, যে পথই বিশ্বপরিভ্রমণটি অতিক্রম করবে, স্থানীয় জনসাধারণ তাদের স্বকীয়তা ও সৃজনশীলতার ভিত্তিতে বহুমুখী কার্যক্রমের উদ্যোগ নিতে পারেন। কল্পনার তুলিতে রং মিশিয়ে সব কিছুই এখানে করা যাবে। অংশ গ্রহণ করার সম্ভাব্য সকল রাস্তাই বহুমুখী এবং বৈচিত্রময়। ইন্টারনেটে সংযুক্ত থেকেও যে কেউ এটাতে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
বিশ্বের অধিকাংশ জনগণের কাছে আমাদের বার্তা পৌছানোর লক্ষ্যে এই পরিভ্রমণ জনগণের দ্বারা এবং জনগণের জন্যই পরিচালিত। একারণেই আমরা সকল প্রচার মাধ্যমকে আহ্বাণ জানাচ্ছি শান্তি ও অহিংসার লক্ষ্যে পরিচালিত এই বিশ্বপরিভ্রমণটির সকল তথ্যসমূহকে প্রচার করার জন্য।
কি ঘটতে যাচ্ছে ?
এই বিশ্বপরিভ্রমণটি প্রতিটি শহর প্রদক্ষিণকালে স্থানীয় জনগণ ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগতভাবে ফোরাম, কনফারেন্স ও সকল ধরণের উৎসবের (ক্রীড়ানুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সামাজিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি) আয়োজন করবে যা তাদের সৃজনশীলতাকে তুলে ধরবে। বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের শত শত প্রকল্প ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে।
আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
আমরা চাই সারা বিশ্বে যে ভয়ংকর পরিবেশ ও পরিস্থিতি যা কিনা আমাদের ক্রমাগত ধাবিত করছে পারমানবিক যুদ্ধের দিকে, তার অবসান ঘটাতে । তানা হলে এ পারমানবিক যুদ্ধ হবে মানবজাতির ইতিহাসে এক ভয়াবহ বিপর্যয় যা মানুষকে ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে নিয়ে যাবে। আমরা চাচ্ছি, বিশ্বের অধিকাংশ শান্তিকামী মানুষের মুখে ভাষা দিতে। যদিও মানবজাতির অধিকাংশই এ অস্ত্র প্রতিযোগীতাকে বিরোধিতা করে, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সমন্বিত বার্তা পাঠাচ্ছিনা, বিপরীতে আমরা নিজেদেরকে শক্তিশালী অথচ সংখ্যালঘিষ্ঠ কিছু লোক দ্বারা পরিচালিত হতে দিচ্ছি এবং স্বভাবতই এর কুফল ভোগ করছি। সময় এসেছে আমাদের সবার একত্রিত হয়ে দাড়াঁবার এবং আমাদের প্রতিপক্ষদের শক্তি দেখিয়ে দেবার। আসুন, আমাদের সাথে যোগ দিন এবং অন্য অনেক শান্তিকামীর প্রতি পরিষ্কার বার্তা ছড়িয়ে দিন এবং আপনার আওয়াজ সকলকে শুনতে দিন।
|